ঈদুল আজহা ২০২৪ কত তারিখে - eid ul adha 2024 bangladesh

ঈদুল আজহা ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে ১৬ জুন বা ১৭ জুন চাঁদ দেখার উপরে নির্ভরশীল। তবে ১৬ জুন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।


ঈদুল আজহা ২০২৪ কত তারিখে - ঈদুল আযহা কত তারিখে

সাধারণত সৌদি আরবে ঈদ হওয়ার একদিন পরে বাংলাদেশে ঈদ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেই হিসেবে সৌদি আরবে যেদিন ঈদ অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের তারপরের দিন হবে। জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হয়। যেহেতু আরবি মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল তাই চাঁদ ওঠার পূর্বেই নির্দিষ্ট করে ঈদের দিন তারিখ বলা সম্ভব নয়। তবে  বাংলাদেশে ১৬ জুন বা ১৭ জুন এই দুই দিনের যেকোনো একদিন ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। 

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজ আদায় করার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। তবে বছর ঘুরে বহুদিন পরে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়। ফলে অধিকাংশ মানুষের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম মনে থাকে না। আপনার যদি ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম মনে না থাকে তাহলে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো মনোযোগের সাথে পড়ুন। নিচে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। 

ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। যার উপরে জুম্মার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব তার উপরে ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করা সুন্নত। বিনা ওজোরে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা মাকরুহ।

কিরে নামাজে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবীর দিতে হয়। অতিরিক্ত ছয় তাকবির আদায় করা ওয়াজিব। উভয়ের রাকাতে অতিরিক্ত তিন তাকবীর করে মোট ছয় তাকবির আদায় করতে হয়। প্রথম রাকাতে থাকবে তাহরীমা এবং ছানা পড়ার পরে অতিরিক্ত দিন তাকবীর দিতে হয়। 

এবং দ্বিতীয় রাকাতে কেরাত পাঠ করার পর রুকুতে যাওয়ার আগে তিন তাকবীর আদায় করতে হয়। তাকবীরগুলো বলার সময় ইমাম এবং মুক্তাদী উভয়কেই হাত উপরে উঠাতে হবে এবং তৃতীয় তাকবীর ব্যতীত অন্যান্য তাকবীরের সময় হাত ছেড়ে দিতে হবে। এরপরে অন্যান্য নামাজের মত নামাজ শেষ করবে।

তবে যদি কোন মুসল্লি তাকবীরগুলো না পায় তাহলে সে রুকুতে থাকা অবস্থায় এসে তাকদীর গুলো আদায় করে নিবে। আর কোন ব্যক্তির যদি পূর্ণ এক রাকাত নামাজ ছুটে যায় সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে দ্বিতীয় রাকাতে কেরাতের পরে বৈশিষ্ট তাকবীর গুলো আদায় করে নিতে হবে। তবে চাইলে রাতের আগেও আদায় করে নেওয়া যেতে পারে। 

যদি কোন ব্যক্তি ঈদের নামাজ না পায় সে ক্ষেত্রে তাকে অন্য কোন জায়গায় গিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে। হবে তবে কোন জায়গাতেই যদি ঈদের নামাজ অবশিষ্ট না থাকে সেক্ষেত্রে সে শুধুমাত্র চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে এবং ঈদের নামাজের মত অতিরিক্ত কোন আদায় করবে না। (ফাতাওয়া শামি)

নারীদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজে নারীদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে অনেক হাদিস রয়েছে। যেমন একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, হজরত উম্মে আতিয়া (রা:) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে এ মর্মে আদেশ করেছেন যে, আমরা যেন প্রাপ্ত বয়স্কা, ঋতুবতী ও গৃহিনীসহ সকল মহিলাকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সালাতে শরীক হওয়ার জন্য ঘর থেকে বের করে নিয়ে যাই। এমনকি মাসিক ঋতুস্রাব চলাকালীন মেয়েরাও ঈদগাহে হাজির হবে। তবে তারা সালাত আদায় থেকে বিরত থাকবে। কিন্তু ঈদের কল্যাণকর অবস্থা তারা প্রত্যক্ষ করবে এবং মুসলিমদের সাথে দু‘আয় ঋতুবতী মহিলারাও শরীক হবে। (মুসলিম)

উপরে উল্লেখিত হাদিস থেকে বোঝা যায় যে মেয়েরা ঈদের নামাজে উপস্থিত হতে পারবে। তবে আমাদের দেশে যেহেতু মেয়েদের ঈদের নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয় না তাই মহিলাদের ঈদের জামাতে উপস্থিত হওয়ার সম্ভব হয় না। তবে যদি মেয়েদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই মেয়েরা ঈদের নামাজ পড়ার জন্য ঈদগাহে যেতে পারবে। 

ঈদের নামাজের নিয়ত

নামাজের ক্ষেত্র নিয়ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে নিয়ত উচ্চস্বরে পড়তে হবে কিনা সে ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। কোন কোন ওলামায়ে কেরাম মনে করেন যে, উচ্চস্বরে নিয়ত করার কোন প্রয়োজন নেই মনে মনে নিয়ত করলেই চলবে। আবার কিছু কিছু ওলামায়ে কেরামের মতে, মুখে মুখে নিয়ত করা যেতে পারে সমস্যা নেই। 

যাই হোক, নিয়ত যেহেতু সম্পূর্ণ মনের বিষয় তাই মনে মনে করলেই তা আদায় হয়ে যাবে হয়ে যাবে। তবে যদি আপনি একান্তই বলতে চান, সে ক্ষেত্রে এই নিয়ত করতে পারেন

ঈদের নামাজের নিয়ত:

نَوَيْتُ أنْ أصَلِّي للهِ تَعَالىَ رَكْعَتَيْنِ صَلَاةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتِّ التَكْبِيْرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اِقْتَضَيْتُ بِهَذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ  الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ

বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাআতাইন সালাতিল ইদিল ফিতরি মাআ সিত্তাতিত তাকবিরাতি ওয়াঝিবুল্লাহি তায়ালা ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াঝঝিহান ইলা ঝিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি- আল্লাহু আকবার।

অর্থ: আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি, আল্লাহু আকবার।

ঈদের নামাজের সময়

সময় মত নামাজ আদায় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে ঈদের নামাজে এর ব্যতিক্রম নয়। অবশ্যই আপনাকে সঠিক সময়ে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে। ঈদের নামাজের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে হাদিসে বর্ণনা রয়েছে। ঈদের নামাযের সময় হলো চাশতের নামাযের সময়ের মত। অর্থাৎ চাশতের নামাজ যখন আদায় করতে হয় তখন ঈদের নামাজ আদায় করার উপযুক্ত সময়। 

ঈদের নামাযের উপযুক্ত সময় হল সূর্য উদিত হয়ে (নামাযের) নিষিদ্ধ সময় শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু করে যাওয়াল তথা সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার আগ পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যেই ঈদের নামায আদায় হবে। যাওয়ালের পর আর ঈদের নামায সহীহ হবে না।  (সুনানে আবু দাউদ)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

আরো পড়ুন